দখিনের খবর ডেস্ক ॥ গত সপ্তাহে দুই দফা বাড়লেও চলতি সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা। আর আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে দুই টাকা। এদিকে বাজারে নতুন আসা সজনে, পটল ও ঢেঁড়সের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে। তবে অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সজনের দাম কেজিতে কমেছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। আর পটল ও ঢেঁড়সের দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা করে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে দুই দফা দাম বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছিল। আর আলুর দাম গত সপ্তাহে ছিল ১৮ টাকা যা চলতি সপ্তাহে ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী গৌতম বলেন, পেঁয়াজের একটু দাম বাড়ায় গত সপ্তাহে কিছু ক্রেতা বাড়তি কিনে মজুদ করেন। এতে পেঁয়াজের টান বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়ে গিয়েছিল। এখন দাম কমলেও বিক্রি কম হচ্ছে। তিনি বলেন, এবার পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুব কম। কিছুদিন পর ভালো মানের নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। তখন পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে। সুতরাং এবার রোজার ভেতর পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, দাম বাড়ায় গত সপ্তাহে ৪৫ টাকা কেজি দরে ৫০ বস্তা পেঁয়াজ কিনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। ৪৫ টাকা কেজি কেনা পেঁয়াজ এখন ৪০ টাকায় বিক্রি করছি। কেজিতেই পাঁচ টাকা লোকসান হচ্ছে। এমন ধরা খাবো কল্পনাও করতে পারিনি। এদিকে গত সপ্তাহে বাজারে নতুন আসা সজনের ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। যা এখন ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম কমার পাশাপাশি বাজারে সজনের ডাটার সরবরাহ ও বেড়েছে। সজনে ডাটার বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী লিটন বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি সজনে ২০০ টাকা বিক্রি করেছি। গতকাল কম দামে কিনতে পারায় ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কয়েকদিনের মধ্যে সজনের ডাটার দাম আরও কমে যাবে। কারণ এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে সজনের ডাটার সরবরাহ অনেক বেড়ে গেছে। খিলগাঁওয়ে ১৬০ টাকা কেজি সজনের ডাটা বিক্রি করা জামিল হোসেন বলেন, আমরা সবসময় ভালো মানের পণ্য নিয়ে আসি। বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন আমাদের থেকে ভালো মানের সজনের ডাটা কোথাও পাবেন না। ভালো জিনিস নিতে হলে দাম একটু বেশি দিতেই হবে। তিনি আরও বলেন, আজ সজনের ডাটার কেজি ১৬০ টাকা বিক্রি করেছি। গত গতকাল শুক্রবার তো ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহে কেজিতে ৬০ টাকা কমে গেছে। এরপরও কম চান? আরও কম দামে সজনে খেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে। সজনে ডাটার পাশাপাশি কিছুটা দাম কমেছে পটল ও ঢেঁড়সের। গত সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পটল ও ঢেঁড়সের দাম কিছুটা কমে এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বরবটি। এ সবজিগুলোই এখন বাজারের সব থেকে দামি। বাকি সবজিগুলোর বেশিরভাগের দাম চলতি সপ্তাহে যেমন অপরিবর্তিত রয়েছে, তেমনি রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। শশার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বেগুনের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজরের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লাউয়ের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস। এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত সপ্তাহের মতো বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। তবে পাকিস্তানি সোনালি বা কক মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এই মুরগির কেজি বিক্রি হয় ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা। মুরগির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী শহিদুল বলেন, সহসা মুরগির দাম কমার সম্ভাবনা কম। বরং সামনে আরও বাড়তে পারে। কারণ কিছুদিন পরেই শবেবরাত। তারপর রোজা শুরু। আমাদের ধারণা শবেবরাতের আগেই মুরগির দাম আরও বাড়বে।
Leave a Reply